বাঙালরা দুনিয়ার সব থাকি গরীবদের অন্যতম। হেই চার্যাপদেও, গরীব গুর্বা বাঙালরে আমরা পাইছি। এখনকার সাহিত্যে অবশ্য গরীবদের উপস্থিতি নাই। দারিদ্র লইয়া শিল্প করারে আমরা, 'বিপ্লব' আর হাইপারবোল দিয়া ঢাকি ফেলি।
ফিরোজা পাড় হালকা গোলাপি শাড়ির সঙ্গে কনুই অব্দি লম্বা একটা প্রিন্টেড ব্লাউজ পরল। কপালে বড়ো কালো টিপ পরে ঠোঁটে ম্যাট মেরুন লিপস্টিক ছুঁইয়ে আয়নায় নিজেকে দেখে বলল, বাহ্ বেশ মিষ্টি দেখাচ্ছে! ব্যাগ খুলে সব গুছিয়ে নিল। মানিপার্স, সানগ্লাস আর মোবাইল-- সবই নেয়া হয়েছে। তবু মনে হচ্ছে কী যেন একটা ভুলে গিয়েছে, মনে পড়ছে না।
‘কমলা রকেট’ দেখতে বেরুলাম। বসের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে গেলাম। সময় মেপে পৌঁছুলাম ঠিক ৪ টা ২৫ এ। টিকেট বিক্রেতা জিজ্ঞেস করল আমি কি আজকের টিকেট চাইছি না আগামীকালকের? আমি বললামঃ আজকেই দেখব তাই এত তাড়াহুড়া করে এলাম। টিকেট চেকার জানাল ‘প্রিমিয়াম’ টিকেট মাত্র ৩ টা আছে। ইকোনমি শেষ।সেখান থেকেই নিতে হবে।
অনেক রাত পর্যন্ত বন্ধু এবং বন্ধুর স্ত্রীর ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে আমি আর সাহানা গভীর রাতে বাড়ি দিকে পা বাড়ালাম। ওরা দুজন আমাদের সাবওয়ে পর্যন্ত এগিয়ে দিতে আমাদের সঙ্গে হাঁটতে শুরু করলেন। আহা সত্যি! মনের মধ্যে কী সাংঘাতিক মরচেটাই না ধরেছিল, ওদের ওখানে না এলে তা কখনো আবিষ্কারই করতে পারতাম না!
দোকান আর বোন- আমার কাছ থেকে বাবা আর মা, দুইজনকেই অনেক দূরে সরিয়ে নিল। বাবা প্রতিদিন সকাল দশটায় বাড়ি ছাড়েন, ফেরেন রাত নয়টার পরে। কোন কোন দিন দুপুরে খেতে আসেন। কেবল ঘণ্টাখানেক থেকে আবার নাই হয়ে যান। বোনের জন্ম হলে মাও আটকা পড়ে গেলেন ঘরের বিছানায়। কেউ আমাকে আর ছড়া শোনায় না।
নজরুলের আর্কেইক শব্দের ইউজের লগে, বা কলোনিয়াল জোশের লগে ফররুখের কবিতা করতে চাওয়ার মিল কম। ফররুখের তন্ময় কবিতার দুনিয়ায় জাহাজ, মাস্তুল, আখরোট-জামিরের বন পিপাসার মতন।
আর্টিস্টদের কাজ নিয়ে কেউ করে উচ্ছাসিত প্রশংসা, আবার কেউ একদম দমিয়ে দেয় বিব্রতকর মন্তব্য করে । এরকম রোলার কোস্টারেই চড়তে হয় আর্টিস্টদের । কিছু মন্তব্য আর্টিস্টদের মন একেবারেই ভেঙ্গে দেয় । আর্টিস্টরা সচারচর তাদের বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে যে সকল বিব্রতকর কথা সর্বদাই শুনতে হয় তার একটি ফিরিস্তি তৈরি করা গেল ।
ভূপেন খাকর ভারত এবং আন্তর্জাতিকভাবে নিঃসন্দেহে একজন জনপ্রিয় আর্টিস্ট । খাকর একজন স্বশিক্ষিত আর্টিস্ট ছিলেন । তাঁর ছবিগুলো মূলত ফিগারেটিভ ছিল । তিনি ছবিতে হিউম্যান বডি এবং এর আইডেন্টিটি নিয়ে কাজ করেছেন । তিনি স্ব-ঘোষিত হোমোসেক্সুয়াল ছিলেন ।
ইভান উঠে একটানে রনিতাকে বুকের ওপর টেনে নিয়ে চুমু খেতে লাগল। বিছানায় নিয়ে আসে। রনিতা মুখ খোলার চেষ্টা করতেই আবারও ঠোঁটের ওপর ঠোঁট চেপে ধরে থাকে। কাল রাতের অভিমান এখনো ঠোঁটে, আদরে আদরে ভাসিয়ে দিয়ে অভিমানের নিষ্কাম চোখকে ইভান বলতে থাকে, -তুমি আমার করমচা। তু্মি আমার কামরাঙা হও। এবার আমার জন্য একটু রাঙা হও রিনিঝিনি।
ওই কামরার মাপেই একটা বিন্দুর মধ্যে বাংলা সাহিত্যের ভিন্ন স্বরের এ শিল্পীর শেষ জীবনের দিনগুলো বেঁধে দেন তাঁর সন্তানরা। আপাদমস্তক নিরীহ এ বাবার এমন দিনও গেছে, ব্যথায় কাতরালেও পঞ্চাশ পয়সার একটা প্যারাসিটামল তাঁর সন্তানরা কিনে দেননি।