লইট্টা মাছ। পরিচয় করে দেয়ার কিছু নেই। ইংরেজিতে বলা হয় ‘Bombay Duck’। কিন্তু লইট্টা মাছ আবার হাঁস হতে যাবে কেন! বৃটিশরা দেয় এই নাম। বৃটিশ আমলে ভারতের বিভিন্ন জায়গা থেকে লইট্টা শুটকি মালগাড়ি মেইল ট্রেনে বোম্বে আসতো। বৃটিশরা এই লইট্টা শুটকির চালানকে বলতো ‘মেইল’ বা ‘ডাক’। সেই থেকে ‘বোম্বে ডাক’। লইট্টা মাছ স্বস্তা মাছ। দামে স্বস্তা হলেও পুষ্টিতে ভরপুর এই লইট্টা মাছ।
লইট্টা মাছ প্রোটিনে ভরপুর। যখন লইট্টা মাছকে শুটকি করা হয়, তখন এই প্রোটিনের পরিমান আরো বৃদ্ধি পায়। আর প্রোটিন আমাদের শরীরের টিস্যু গঠনে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও লইট্টা মাছে থাকা প্রোটিন শরীরের হরমোন, এনজাইম এবং অন্যান্য কেমিক্যালের ভারসাম্য বজায় রাখে।
লইট্টা মাছে রয়েছে অতি উপকারী ওমেগা-৩-ফ্যাটি এসিড। এটি মানুষের শরীরের রক্তনালীগুলোকে পরিস্কার রেখে হার্ট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। হার্টের সুস্বাস্থ্যের জন্যে লইট্টা মাছে থাকা ওমেগা-৩-ফ্যাটি এসিডের কাজ বহুমাত্রিক যেমন, অতিরিক্ত রক্তজমাট বাঁধা প্রতিহত করা, রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের লেভেল কমানো, রক্ত-সঞ্চালন বাড়ানো ইত্যাদি।লইট্টা মাছ আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত রোগীর জন্যে আর্শীবাদ স্বরূপ। এই মাছের তেল দারুন এক পেইনকিলার হিসেবে কাজ করে। এছাড়াও লইট্টা মাছ কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
লইট্টা শুটকিতে থাকা ক্যালসিয়াম উচ্চ-রক্তচাপ কমায়। এছাড়াও এই ক্যালসিয়াম পিরিয়ড শুরুর প্রাককালে নারীদের যে মুডজনিত মানসিক সমস্যা হয় তা কমায়। লইট্টা শুটকিতে রয়েছে প্রচুর আয়রন। যারা রক্তাল্পতায় ভুগছেন, তাদের জন্য এটি দারুণ কার্যকরি।
এছাড়াও লইট্টা মাছ হিমোগ্লোবিন তৈরি, পেশির শক্তিবৃদ্ধি, ব্রেইনের সক্ষমতা বৃদ্ধি, শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন, শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, ইনসমনিয়া কমানো, শক্ত হাঁড় ও দাত তৈরি, পরিপাকে সহায়তা, দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি, ত্বক ও ঠোঁটের সুস্বাস্থ্যসহ অসংখ্য স্বাস্থ্য-উপকার করে থাকে।